১৯১৭ সালের ২৭ অক্টোবর বসনিয়ার দক্ষিণ প্রদেশের স্টোলাক নামের এক শহরে তার জন্ম। বসনিয়ার এক মুসলিম পরিবারে বাবা মুহারেম এবং মা নেজিরার ঘরে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিক্ষুব্ধ সময়ে তার জন্ম। জন্মের সময় তার নাম ছিল মেহমেদ আলিজা ডিজ্ডার। তিন সন্তানের মাঝে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তার বড় ভাই হামিদও একজন লেখক ছিলেন।
‘শব্দদের প্রত্যেকের আছে রং আর গন্ধ
কিছু শব্দের আছে একটি ভাষা
আর কিছু
একদম বোবা’
১৯১৭ সালের ২৭ অক্টোবর বসনিয়ার দক্ষিণ প্রদেশের স্টোলাক নামের এক শহরে তার জন্ম। বসনিয়ার এক মুসলিম পরিবারে বাবা মুহারেম এবং মা নেজিরার ঘরে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিক্ষুব্ধ সময়ে তার জন্ম। জন্মের সময় তার নাম ছিল মেহমেদ আলিজা ডিজ্ডার। তিন সন্তানের মাঝে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তার বড় ভাই হামিদও একজন লেখক ছিলেন।
১৯৩৬ সালে ডিজ্ডার চলে যান সার্জেভোতে। এখানেই তিনি পড়ালেখা শেষ করে ‘গাজরেত’ নামের এক ম্যাগাজিনে কাজ শুরু করেন। এই পত্রিকাটি তার লেখক ভাই হামিদ পরিচালনা করতেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ডিজ্ডার কমিউনিস্ট পার্টির হয়ে কাজ করেন। এই সময় মেহমেদ আলিজা ডিজ্ডার নাম পাল্টে তিনি ম্যাক ডিজ্ডার ছদ্মনাম গ্রহণ করেন। ফ্যাসিবিরোধী আন্দোলনে জড়িত থাকার কালেই তিনি ম্যাক নামে পরিচিত হন। আদতে ম্যাক ছিল তার সাংকেতিক নাম বা কোড নেইম। কতৃর্পক্ষের হাত থেকে বাঁচতে এ সময় তিনি ক্রমাগত স্থান পরিবর্তন করতেন। দুঃখজনক হলো, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ সময়কালে এসে ১৯৪৫ সালে নাৎসিদের জাসেনোভাক বন্দিশিবিরে প্রাণ হারান তার ছোট বোন রেফিকা এবং মা।
যুদ্ধের পর ডিজ্ডার বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। এ সময় তিনি অসলোবোডেনজে (Oslobodenje) বা ‘স্বাধীনতা’ শীর্ষক পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ডিজ্ডার নিয়মিত দেশ ও মানবতার জন্য কাজ করেছেন। তিনি বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার একাধিক সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত প্রকাশনা সংস্থার প্রধান হিসেবেও কাজ করেন এবং অবশেষে তিনি বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনা রাইটার্স ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ট হন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এ পদেই ছিলেন। ইতোমধ্যে ম্যাড ডিজ্ডার লেখালেখিকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার জাতীয় কবি ম্যাক ডিজ্ডার ক্রমশ দেশের বাইরেও পরিচিত হতে থাকেন।
মাত্র ৫৩ বছর বয়সে ১৯৭১ সালের ১৪ জুলাই এই মহান কবির মৃত্যু হয়। কিন্তু মৃত্যুর পর তিনি যেন তার কবিতার চরিত্রের মতোই আরো জীবন্ত হয়ে ওঠেন। অন্য সব ধ্রুপদি কবির মতোই তিনিও প্রাসঙ্গিক। তাঁর মৃত্যুর ২৪ বছর পর ১৯৯৫ সালে তুজলা শহরে আর্মি অব রিপাবলিকা সাপ্স্কা (Army of Republika Srpska) বোমা হামলা করে। এই গণহত্যায় ৭১ জন নিহত আর ২৪০ জন আহত হয়। তাদের স্মরণে যে সমাধিসৌধ নির্মিত হয়েছে সেখানে রয়েছে ম্যাক ডিজ্ডারের কবিতা
‘এইখানে কেউ বাঁচে না
নেহাত বেঁচে থাকার জন্য।
এখানে কেউ বাঁচে না
নেহাত মরে যাওয়ার জন্য।
এখানে কেউ মরেও যায়
বেঁচে যাওয়ার জন্য।’
ম্যাকের এই কাব্যবাণী শুধু তুজলা গণহত্যার (Tuzla massacre) ক্ষেত্রেই নয়, যুগে যুগে কালে কালে সকল গণহত্যা আর যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতেই প্রাসঙ্গিক।
১৯১৭ সালের ২৭ অক্টোবর বসনিয়ার দক্ষিণ প্রদেশের স্টোলাক নামের এক শহরে তার জন্ম। বসনিয়ার এক মুসলিম পরিবারে বাবা মুহারেম এবং মা নেজিরার ঘরে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিক্ষুব্ধ সময়ে তার জন্ম। জন্মের সময় তার নাম ছিল মেহমেদ আলিজা ডিজ্ডার। তিন সন্তানের মাঝে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তার বড় ভাই হামিদও একজন লেখক ছিলেন।
By মুম রহমান
Category: কবিতা
‘শব্দদের প্রত্যেকের আছে রং আর গন্ধ
কিছু শব্দের আছে একটি ভাষা
আর কিছু
একদম বোবা’
১৯১৭ সালের ২৭ অক্টোবর বসনিয়ার দক্ষিণ প্রদেশের স্টোলাক নামের এক শহরে তার জন্ম। বসনিয়ার এক মুসলিম পরিবারে বাবা মুহারেম এবং মা নেজিরার ঘরে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিক্ষুব্ধ সময়ে তার জন্ম। জন্মের সময় তার নাম ছিল মেহমেদ আলিজা ডিজ্ডার। তিন সন্তানের মাঝে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তার বড় ভাই হামিদও একজন লেখক ছিলেন।
১৯৩৬ সালে ডিজ্ডার চলে যান সার্জেভোতে। এখানেই তিনি পড়ালেখা শেষ করে ‘গাজরেত’ নামের এক ম্যাগাজিনে কাজ শুরু করেন। এই পত্রিকাটি তার লেখক ভাই হামিদ পরিচালনা করতেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ডিজ্ডার কমিউনিস্ট পার্টির হয়ে কাজ করেন। এই সময় মেহমেদ আলিজা ডিজ্ডার নাম পাল্টে তিনি ম্যাক ডিজ্ডার ছদ্মনাম গ্রহণ করেন। ফ্যাসিবিরোধী আন্দোলনে জড়িত থাকার কালেই তিনি ম্যাক নামে পরিচিত হন। আদতে ম্যাক ছিল তার সাংকেতিক নাম বা কোড নেইম। কতৃর্পক্ষের হাত থেকে বাঁচতে এ সময় তিনি ক্রমাগত স্থান পরিবর্তন করতেন। দুঃখজনক হলো, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ সময়কালে এসে ১৯৪৫ সালে নাৎসিদের জাসেনোভাক বন্দিশিবিরে প্রাণ হারান তার ছোট বোন রেফিকা এবং মা।
যুদ্ধের পর ডিজ্ডার বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। এ সময় তিনি অসলোবোডেনজে (Oslobodenje) বা ‘স্বাধীনতা’ শীর্ষক পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ডিজ্ডার নিয়মিত দেশ ও মানবতার জন্য কাজ করেছেন। তিনি বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার একাধিক সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত প্রকাশনা সংস্থার প্রধান হিসেবেও কাজ করেন এবং অবশেষে তিনি বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনা রাইটার্স ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ট হন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এ পদেই ছিলেন। ইতোমধ্যে ম্যাড ডিজ্ডার লেখালেখিকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার জাতীয় কবি ম্যাক ডিজ্ডার ক্রমশ দেশের বাইরেও পরিচিত হতে থাকেন।
মাত্র ৫৩ বছর বয়সে ১৯৭১ সালের ১৪ জুলাই এই মহান কবির মৃত্যু হয়। কিন্তু মৃত্যুর পর তিনি যেন তার কবিতার চরিত্রের মতোই আরো জীবন্ত হয়ে ওঠেন। অন্য সব ধ্রুপদি কবির মতোই তিনিও প্রাসঙ্গিক। তাঁর মৃত্যুর ২৪ বছর পর ১৯৯৫ সালে তুজলা শহরে আর্মি অব রিপাবলিকা সাপ্স্কা (Army of Republika Srpska) বোমা হামলা করে। এই গণহত্যায় ৭১ জন নিহত আর ২৪০ জন আহত হয়। তাদের স্মরণে যে সমাধিসৌধ নির্মিত হয়েছে সেখানে রয়েছে ম্যাক ডিজ্ডারের কবিতা
‘এইখানে কেউ বাঁচে না
নেহাত বেঁচে থাকার জন্য।
এখানে কেউ বাঁচে না
নেহাত মরে যাওয়ার জন্য।
এখানে কেউ মরেও যায়
বেঁচে যাওয়ার জন্য।’
ম্যাকের এই কাব্যবাণী শুধু তুজলা গণহত্যার (Tuzla massacre) ক্ষেত্রেই নয়, যুগে যুগে কালে কালে সকল গণহত্যা আর যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতেই প্রাসঙ্গিক।